সরকারি সিদ্ধান্ত মানতে বাস মালিকদের বাধ্য করুন
ইমরুল কায়েস লিখেছেন যুগান্তরে
|
![]() আবার এমন অভিযোগও আছে, মালিকরা বাসভাড়া বাড়ানোর পাঁয়তারা হিসেবে লোকাল সার্ভিসের নামে এমন নাটক করেছে। এ ক্ষেত্রে আমলাদের কেউ কেউ সহযোগী হয়েছে তাদের। এর আগেও নানা ছলছুতোয় এভাবে ভাড়া বাড়িয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। যদি এ খবর সত্যি হয় তাহলে জনসাধারণের জন্য যে আরও দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে তা বলে বোঝাতে হবে না। মালিকরা জানেন, তাদের এই কারসাজি নিয়ে গণমাধ্যম কয়েকদিন সরব থাকবে। তারপর ধীরে ধীরে ইস্যুটি হারিয়ে যাবে। তখন তারা ইচ্ছামতো তাদের ভাড়া বাড়ানোর উদ্দেশ্যটি বাস্তবায়ন করতে পারবেন। আর জনগণও কয়েকদিন হইচই করে ভোগান্তি পোহাতে পোহাতে তাদের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি মেনে নেবে। মেনে নেয়া ছাড়া গত্যন্তরও থাকবে না ভুক্তভোগীদের। কাহাতক আর প্রতিদিন ভাড়া নিয়ে বাস শ্রমিকদের সঙ্গে গ্যাজ গ্যাজ করা যায়! ঢাকাসহ সারা দেশের গণপরিবহনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একটি সিন্ডিকেট। কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম জড়িয়ে খবর বেরিয়েছে গণমাধ্যমে। প্রভাবশালীদের কেউ কেউ সরকারের অংশ। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, প্রভাবশালী ওই ব্যক্তিরাই পেছন থেকে পরিবহন সেক্টরের কলকাঠি নাড়েন। তাদের বাধার কারণে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় অনেক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে না। এই যেমন, রাজধানীতে লোকাল সার্ভিসের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তাদের বাধার কারণে আবার বিআরটিএ বা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়কে পিছু হটতে হল। মূলত এই সিন্ডিকেটের কাছে মন্ত্রণালয়ও অসহায়, যা গত ১৮ এপ্রিল সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কেউ নানা অজুহাতে যদি গাড়ি না চালায়, আমরা কি আমাদের দেশের বাস্তবতায় জোর করে গাড়ি নামাতে পারব? আর গাড়ির সঙ্গে যারা জড়িত, তারা খুব সামান্য মানুষ না, তারা অনেকেই খুব প্রভাবশালী। সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর এসব কথা থেকে বোঝা যায় কতটা ভয়ঙ্কর এই সিন্ডিকেট। এরা সরকারকেও পরোয়া করতে চায় না। নিজেদের স্বার্থ হাসিলে তারা বাস ধর্মঘটের ডাক দিতেও পিছপা হয় না, যা অতীতে দেখা গেছে। তবে সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর এমন কথাবার্তা জনগণ শুনবে কেন? কেন তারা মেনে নেবে? জনগণ তো আর লোকাল সার্ভিস করার সিদ্ধান্ত নেয়নি। বরং তার মন্ত্রণালয়ই এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে বাস্তবায়ন করতে না পেরে পরিবহন খাতে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আর ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এখন যদি এই সিদ্ধান্ত থেকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সরে আসে অর্থাৎ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে না পারে তাহলে ব্যর্থতা বা দায় মন্ত্রীর কাঁধেই বর্তাবে। সুতরাং সঠিক কাজটি হবে যত বড় সিন্ডিকেটই হোক না কেন, তার মূলোৎপাটন করা। সরকারি সিদ্ধান্ত মানতে সবাইকে বাধ্য করতে হবে। প্রয়োজনে আরও কঠোর হওয়া উচিত। যেসব মালিক বা কোম্পানি সিদ্ধান্ত মানবে না তাদের রুট পারমিট বাতিল বা প্রয়োজনে মামলাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। : সাংবাদিক [email protected] |